যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ঘিরে ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে সহিংসতার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মার্কিন নাগরিকরা। তাদের মতে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ হবে কিনা এবং ফলাফল ব্যাপকভাবে গৃহীত হবে কিনা তা নিয়েও ভোটাররা চিন্তিত। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ভোটারদের মাঝে ততই বাড়ছে উত্তেজনা। ইউএসএ টুডে ও সাফোক বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ জরিপ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
জরিপে দেখা গেছে, চারজন ভোটারের মধ্যে তিনজনেরই আশঙ্কা নির্বাচনকে ঘিরে সহিংসতা দেখা যেতে পারে। শুধু একজন ভোটারের দৃঢ় বিশ্বাস নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে, তাও ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন যদি বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারিয়ে দিতে পারেন।
এক হাজার জন ভোটার এ জরিপে অংশ নেন। এতে দেখা যাচ্ছে, নির্বাচন নিয়ে ৩৬ শতাংশ ভোটার খুব উদ্বিগ্ন। ১১ শতাংশ ভোটার খুব একটা উদ্বিগ্ন নন, ১১ শতাংশ ভোটার একেবারেই উদ্বিগ্ন নন।
ফ্লোরিডার পিটার্সবার্গের এক রেজিস্টার্ড নার্স এ জরিপে অংশ নেন। তিনি ইতিমধ্যে আগাম ভোট দিয়েছেন। বাইডেনকেই তিনি ভোট দিয়েছেন বলে জানান। ৭২ বছর বয়সী এ মার্কিন নাগরিক বলেন, ‘এ মুহূর্তে খুব চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। আমার পুরো জীবনে এমন ভীতিকর পরিস্থিতি দেখেছি ১৯৬২ সালে জন এফ কেনেডির প্রেসিডেন্ট হওয়ার সময় এবং কিউবার ক্ষেপণাস্ত্র সংকট মুহূর্তে।’
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ভোটের সময় ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপ কর্ণধার মার্ক জাকারবার্গ। মার্কিন প্রশাসনকে সতর্ক করে দিয়ে জাকারবার্গ বলেন, ভোটের আগে মার্কিন ভোটারদের মধ্যে মেরুকরণ হয়ে গেছে। তার ওপর এবার ভোটের ফল বের হতে লাগবে দীর্ঘ সময়। চুড়ান্ত ফল প্রকাশ হতে কয়েক সপ্তাহও লাগতে পারে। এই অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রে অশান্তির সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে। যে কোনো মূল্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া খবর ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করতে হবে বলে মত দেন তিনি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জাকারবার্গ জানান, এই পরিস্থিতিতে তাদের আগের থেকেও বেশি সতর্ক হতে হবে। গত সপ্তাহে ফেসবুকে কয়েকটি রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়।
ফেসবুকের প্রোডাক্ট ম্যানেজার রব লেথার্ন বলেন, একটি মহল থেকে অভিযোগ উঠেছে, কয়েকটি বিজ্ঞাপন নাকি দেখানো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আমরা তদন্ত করে দেখছি এই অভিযোগ ঠিক কিনা।
এদিকে ক্যালিফোর্নিয়ায় ফেসবুকের সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, ২০২০ সালের নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন নিয়ে কড়াকড়ি করা হয়েছে। সংস্থা লক্ষ্য রাখছে কেউ যেন এমন কোনো বিজ্ঞাপন না দেয় যাতে সামগ্রিকভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়াকেই ছোট করা হয়।
প্রসঙ্গত, আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলগণনা ৩ নভেম্বর। তার এক সপ্তাহ আগে থেকে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি নাগরিকদের ভোটদানে নিরুৎসাহ করে, এমন প্রচার বা পোস্টের বিরুদ্ধেও তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছিলেন জাকারবার্গ।
Leave a Reply